*
ঐশ্বরিক মতবাদের সমালোচনা সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো:
১। বলা হয় যে, এই মতবাদ রাজতন্ত্রের মুখপাত্র। এটি রাজতন্ত্রের প্রতি অধিক মাত্রায় শ্রদ্ধাশীল। ঈশ্বরের সত্যিকার প্রতিনিধি কে? এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর ঐশ্বরিক মতবাদে পাওয়া যায় না ।
২। এ মতবাদ অযৌক্তিক। এতে বিশ্বাসের উপর অত্যধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়, যুক্তির উপর নয় ।
৩। এ মতবাদ অগণতান্ত্রিক, কেননা এতে ঈশ্বরই সকল ক্ষমতার অধিকারী এবং শাসক হিসেবে রাজা তাঁর প্রতিনিধি মাত্র। শাসক তাঁর সকল কাজের জন্য ঈশ্বরের নিকট দায়বদ্ধ থাকবেন, জনগণের নিকট নয়। কিন্তু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় শাসককে জনগণের নিকট দায়বদ্ধ থাকার ব্যাবস্থা করা হয়। কাজেই রাষ্ট্রের উৎপত্তির ঐশ্বরিক মতবাদ সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক ।
৪। ঐশ্বরিক মতবাদ রাষ্ট্রকে এক প্রকার দৈব প্রতিষ্ঠান বলে মনে করে। কিন্তু বাস্তবে রাষ্ট্র হচ্ছে মানবীয় প্রতিষ্ঠান। ঈশ্বর বিশ্বকে সৃষ্টি করেছেন কিন্তু রাষ্ট্র নামক প্রতিষ্ঠানের স্রষ্টা হচ্ছে মানুষ। আর মানুষ রাষ্ট্রীয় সংগঠন তৈরী করেছে তাদের পার্থিব প্রয়োজন মেটাবার জন্য।
৫। এ মতবাদ দ্বন্দ্ব কলহের সৃষ্টি করে । প্রচীনকালে গ্রীক ও রোমানদের দ্বারা এ মতবাদ প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। মধ্যযুগে এ মতবাদ পোপ ও সম্রাটের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি করেছে। কাজেই এ মতবাদ যে প্রতিক্রিয়াশীল (Reactionary)তা বলাই বাহুল্য।
Comments
Post a Comment