*
পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্র
১ম অধ্যায় - তাপগতিবিদ্যা
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১) আপেক্ষিক তাপ কাকে বলে?
উ: 1 kg ভরের কোনাে বস্তুর তাপমাত্রা 1K বৃদ্ধি করতে প্রয়ােজনীয় তাপকে ঐ বস্তুর আপেক্ষিক তাপ বলে।
২) অন্তঃস্থ শক্তি কী?
উ: বস্তুর অভ্যন্তরস্থ অণু, পরমাণু ও মৌলিক কণাসমূহের রৈখিক গতি, স্পন্দন গতি ও ঘূর্ণনগতি এবং তাদের মধ্যকার বলের কারণে উদ্ভূত শক্তিই অন্তঃস্থ শক্তি।
৩) তাপ গতিবিদ্যার ১ম সূত্রটি বিবৃত কর।
উ: তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্রটি হলাে- যখন যান্ত্রিক শক্তিকে সম্পূর্ণরূপে তাপে বা তাপশক্তিকে সম্পূর্ণরূপে কাজে রূপান্তরিত করা হয় তখন যান্ত্রিক শক্তি ও তাপ পরস্পরের সমানুপাতিক হয়।
৪) এনট্রপি কাকে বলে?
উ: রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় বস্তুর যে তাপীয় ধর্ম স্থির থাকে বা অপরিবর্তিত থাকে তাকে এনট্রপি বলে।
৫) প্রত্যাবর্তী বা প্রত্যাগামী প্রক্রিয়া কাকে বলে?
উ: যে প্রক্রিয়া বিপরীতমুখী হয়ে প্রত্যাবর্তন করে এবং সম্মুখবর্তী ও বিপরীতমুখী প্রক্রিয়ার প্রতি স্তরে তাপ ও কাজের ফলাফল সমান ও বিপরীত হয় সেই প্রক্রিয়াকে প্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়া বলে।
৬) তাপগতীয় ব্যবস্থা বা সিস্টেম কী?
উ: তল বা বেষ্টনী দ্বারা সীমাবদ্ধ নির্দিষ্ট পরিমাণ বস্তুকে তাপগতীয় ব্যবস্থা বা সিস্টেম বলে, যেখানে তাপগতীয় চলরাশি পরিমাপ করা যায়।
৭) রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়া কী?
উ: যে তাপ গতীয় প্রক্রিয়ায় সিস্টেম থেকে তাপ বাইরে যায় না বা বাইরে থেকে কোনাে তাপ সিস্টেমে আসে না তাই রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়া।
৮) তাপ গতিবিদ্যার ২য় সূত্রটি বিবৃত কর।
উ: বাইরের কোনাে শক্তি কর্তৃক সম্পাদিত কাজ ব্যতিরেকে শীতল বস্তু হতে উষ্ণ বস্তুতে তাপ নিজে প্রবাহিত হতে পারে না।
৯) অপ্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়া কাকে বলে?
উ: যে প্রক্রিয়া বিপরীতমুখী হয়ে প্রত্যাবর্তন করতে পারে না অর্থাৎ সম্মুখবর্তী ও বিপরীতমুখী প্রতি স্তরে তাপ ও কাজের ফলাফল সমান ও বিপরীত হয় না তাকে অপ্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়া বলে।
১০) তাপীয় সমতা কাকে বলে?
উ: ভিন্ন তাপমাত্রার দুটি বস্তু পরস্পর তাপীয় সংস্পর্শে আসার পর যখন সম তাপমাত্রায় উপনীত হয় তখন এ অবস্থাকে তাপীয় সমতা বা সাম্যাবস্থা বলে।
১১) পানির ত্রৈধ বিন্দু কাকে বলে?
উ: 4.58 mm পারদ চাপে যে তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ বরফ, পানি ও জলীয় বাষ্প একই তাপীয় সাম্যে থাকে তাকে পানির ত্রৈধ বিন্দু বলে।
১২) সমােষ্ণ প্রক্রিয়া কাকে বলে?
উ: যে পরিবর্তনে গ্যাসের তাপমাত্রা সর্বদা ধ্রুব থাকে তাকে সমােষ্ণ পরিবর্তন বলে। স্থির তাপমাত্রায় যদি কোনাে গ্যাসকে প্রসারিত অথবা সঙ্কুচিত করা হয় তবে সেই পরিবর্তনকে সমােষ্ণ প্রসারণ বা সমােষ্ণ সংকোচন বলে এবং যে প্রক্রিয়ায় এ পরিবর্তন ঘটে তাকে সমােষ্ণ প্রক্রিয়া
বলে।
১৩) তাপগতিবিদ্যার শূন্যতম সুত্র বিবৃত কর।
উ: দুটি বস্তু যদি তৃতীয় কোনাে বস্তু (তাপমান যন্ত্র) এর সাথে পৃথকভাবে তাপীয় সাম্যে থাকে তবে প্রথমােক্ত বস্তু দুটি পরস্পরের সাথে তাপীয় সাম্যে থাকবে।
১৪) থার্মোমিটার কাকে বলে?
উ: যে যন্ত্রের সাহায্যে কোনাে বস্তুর তাপমাত্রা সঠিকভাবে পরিমাপ করা যায় এবং বিভিন্ন বস্তুর তাপমাত্রার পার্থক্য নির্ণয় করা যায় তাকে থার্মোমিটার বলে।
১৫) রেফ্রিজারেটর কাকে বলে?
উ: যে যন্ত্র যান্ত্রিক কাজ সম্পন্ন করে নিম্ন তাপমাত্রার উৎস হতে তাপ অপসারণ করে উচ্চ তাপমাত্রার আধারে বর্জন করে তাকে রেফ্রিজারেটর বলে।
১৬) কার্যকৃত সহগ কাকে বলে?
উ: রেফ্রিজারেটর হতে অপসারিত তাপ ও কম্প্রেসর কর্তৃক সরবরাহকৃত যান্ত্রিক কাজের অনুপাতকে কার্যকৃত সহগ বলে।
১৭) ইঞ্জিনের দক্ষতা কাকে বলে?
উ: ইঞ্জিন একটি চক্রে যে পরিমাণ তাপকে কাজে পরিণত করে এবং তাপ উৎস হতে যে পরিমাণ তাপ শােষণ করে এদের অনুপাতকে ইঞ্জিনের দক্ষতা বলে।
১৮) এনট্রপি কাকে বলে?
উ: রূদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় বস্তুর যে তাপীয় ধর্ম স্থির থাকে, তাকে এনট্রপি বলে।
১৯) তাপমাত্রা কী?
উ: তাপমাত্রা হচ্ছে কোনাে বস্তুর তাপীয় অবস্থা যা অন্য কোনাে বস্তুর তাপীয় সংস্পর্শে আনলে ঐ তাপ গ্রহণ করবে, বা তাপ বর্জন করবে তা নির্ধারণ করে।
২০) হিমায়ক কাকে বলে?
উ: নিম্ন স্ফুটনাঙ্কের কোনাে তরল পরিপার্শ্ব হতে লীনতাপ বা সুপ্ততাপ গ্রহণ করে পরিপার্শ্বকে শীতল করে তাকে হিমায়ক বলে।
২১) নিম্ন স্থির বিন্দু কাকে বলে?
উ: যে তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ বরফ পানির সাথে সাম্যাবস্থায় থাকতে পারে অর্থাৎ প্রমাণ চাপে যে তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ বরফ গলতে শুরু করে তাকে নিম্ন স্থিরবিন্দু বা বরফ বিন্দু বা গলনাঙ্ক বলে।
২২) উর্ব স্থির বিন্দু কাকে বলে?
উ: যে তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ পানি জলীয় বাষ্পের সাথে সাম্যাবস্থায় থাকতে পারে বা প্রমাণ চাপে যে তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ পানি জলীয় বাষ্পে পরিণত হতে শুরু করে তাকে ঊর্ধ্ব স্থির বিন্দু বা স্টিম বিন্দু বা স্ফুটনাঙ্ক বলে।
২৩) অভ্যন্তরীণ শক্তি কী?
উ: প্রত্যেক সংস্থার মধ্যে এমন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ শক্তি সুপ্ত অবস্থায় বর্তমান থাকে যার ফলে সংস্থাটি পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার শক্তি উৎপন্ন করতে সক্ষম হয়। সংস্থার এই শক্তিকে অভ্যন্তরীণ বা অন্তর্নিহিত শক্তি বলে।
২৪) তাপের যান্ত্রিক তুল্যাঙ্ক কাকে বলে?
উ: একক তাপ উৎপন্ন করতে যে পরিমাণ কাজ করতে হয় বা একক তাপ দ্বারা যে পরিমাণ কাজ করা যায় তাকে তাপের যান্ত্রিক তুল্যাঙ্ক (সমতা) বলে।
২৫) ধ্রুব আয়তন প্রক্রিয়া কাকে বলে?
উ: যে প্রক্রিয়ায় কোনাে সিস্টেমের আয়তন ব রেখে তাপশক্তির বা গ্যাসের অন্তঃস্থ শক্তির পরিবর্তন ঘটানাে হয় তাকে ধ্রুব আয়তন প্রক্রিয়া বলে।
২৬) মােলার আপেক্ষিক তাপ বা মােলার তাপধারণ ক্ষমতা কাকে বলে?
উ: এক মােল গ্যাসের তাপমাত্রা এক কেলভিন (1K) বৃদ্ধি করতে প্রয়ােজনীয় তাপকে ঐ গ্যাসের মােলার তাপধারণ ক্ষমতা বা মােলার আপেক্ষিক তাপ বলে।
২৭) স্থির চাপে মােলার আপেক্ষিক তাপ কাকে বলে?
উ: স্থির চাপে 1 mole গ্যাসের তাপমাত্রা 1K বৃদ্ধি করতে যে তাপের প্রয়ােজন হয় তাকে স্থির চাপে মােলার আপেক্ষিক তাপ বলে।
২৮) স্থির আয়তনে মােলার আপেক্ষিক তাপ কাকে বলে?
উ: স্থির আয়তনে 1 mole গ্যাসের তাপমাত্রা 1K বৃদ্ধি করতে যে তাপের প্রয়ােজন হয় তাকে স্থির আয়তনে মােলার আপেক্ষিক তাপ বলে।
২১) কার্নো চক্র কাকে বলে?
উ: যে চক্রে কোনাে একটি আদর্শ গ্যাস কার্যকরী পদার্থ হিসেবে একটি নির্দিষ্ট আয়তন, চাপ ও তাপমাত্রা হতে আরম্ভ করে একটি সমােষ্ণ প্রসারণ ও একটি রুদ্ধতাপ প্রসারণ ফিরে আসে, তাকে কার্নো চক্র বলে।
৩০) তাপীয় ইঞ্জিন কাকে বলে?
উ: যে যন্ত্র তাপশক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে, তাকে তাপীয় ইঞ্জিন বলে।
৩১) হিমায়ন কাকে বলে?
উ: কৃত্রিম উপায়ে কোনাে আবদ্ধ স্থানকে পারিপার্শ্বিক অবস্থা হতে নিম্ন তাপমাত্রায় রাখার পদ্ধতিকে হিমায়ন বলে।
৩২) উষ্ণতামিতি পদার্থ কী?
উ: যেসব পদার্থের উষ্ণতামিতি ধর্ম ব্যবহার করে থার্মোমিটার তৈরি করা হয় তাদের উষ্ণতামিতি পদার্থ বলে। যেমন—পারদ।
৩৩) উষ্ণতামিতি ধর্ম কী?
উ: উষ্ণতার পরিবর্তনে পদার্থের যে বিশেষ বিশেষ ধর্ম সুষমভাবে পরিবর্তিত হয় এবং যে ধর্মের পরিবর্তন লক্ষ করে সহজ, সঠিক ও সূক্ষ্মভাবে উষ্ণতা নির্ণয় করা যায় তাকে উষ্ণতামিতি ধর্ম বলে। যেমন—পারদস্তম্ভের উচ্চতা।
Comments
Post a Comment