*
কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য সমূহ নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো :
১। সমাজসেবামূলক কার্য সম্পাদন
কল্যাণমূলক রাষ্ট্র সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সকল ক্ষেত্রে কল্যাণমুখী কর্মসুচি গ্রহণ ও সম্পাদন করে। সমাজের সর্বাধিক মঙ্গলের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা, সামাজিক বীমা, বেকারভাতা, বিনা খরচে শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করে । রাস্তাঘাট নির্মান, পানীয় জলের সরবরাহ সুস্থ ও অসহায় মানুষের সাহায্য ও পূনর্বাসন ইত্যাদি বিবিধ সমাজ সেবামূলক কার্যাবলী সম্পাদন করে।
২। ব্যক্তি স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্র্য সংরক্ষণ
কল্যাণকামী রাষ্ট্র ব্যক্তির স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্র্য রক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তিত্ব বিকাশের পথ উম্মুক্ত করে। কল্যাণমূলক রাষ্ট্র ব্যক্তি স্বাধীনতার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি এবং ব্যক্তির অধিকার সংরক্ষণ করে ।
৩। জীবনযাত্রার মান সংরক্ষণ
কল্যাণমূলক রাষ্ট্র নাগরিকদের মধ্যে বিরাজমান অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করে জীবনযাত্রার ন্যূনতম মান (Minimum standard of living) সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে। সমাজের ধনী দরিদ্রের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করে সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা করে।
৪। সকলের স্বার্থ সংরক্ষণ
কল্যাণমূলক রাষ্ট্র জাতি, ধর্ম, শ্রেণী,গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকলের সাধারণ স্বার্থ সংরক্ষরণ করে। এ ব্যবস্থা বিশেষ শ্রেণী বা গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করে না। শ্রমিক, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি সকলের স্বার্থ রক্ষার জন্য সচেষ্ট হয়।
৫। পূর্ণ কর্মসংস্থান
কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে পূর্ণ কর্মসংস্থানকে লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। উইলিয়াম বেভারিজ তার "Full Employment in a Free Society" গ্রন্থে পূর্ণ কর্মসংস্থানকে কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য বলে উল্লেখ করেছেন।
৬। মধ্যমপন্থা অবলম্বন
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র মধ্যপন্থা অবলম্বন করে। ব্যক্তিগত মালিকানা ও রাষ্ট্রীয় মালিকানার মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করে মানুষের দুঃখ কষ্টের লাঘব করে থাকে। পুঁজিবাদী ও সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার সমন্বয় ঘটিয়ে সুফল লাভের ব্যবস্থা করে।
৭। শিক্ষা সংস্কৃতি
কল্যাণমূলক রাষ্ট্র মানুষের মধ্যে উদারতাবোধ, মুক্তবুদ্ধি, মুক্তচিন্তা এবং আত্মবিশ্বাসের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে । এ লক্ষ্যে সাহিত্য- সংস্কৃতি শিল্পকলা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ বিকাশে রাষ্ট্র মনোযোগী হয়। সাংস্কৃতিক বিকাশের জন্য রাষ্ট্র কবি, শিল্পী সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীদের উৎসাহ দিয়ে থাকেন।
Comments
Post a Comment