*
রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতির মূল লক্ষ্য হল একটি উন্নত ও স্থিতিশীল রাষ্ট্রগঠন। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। আর, এম, ম্যাকাইভার “Web of Government" গ্রন্থে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতির সম্পর্কের কথা সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন সকল শাসন ব্যবস্থা এর অনুরূপ সম্পত্তি ব্যবস্থার রূপ পরিগ্রহ করে। একটিকে পরিবর্তন করলে অপরটিও পরিবর্তিত হয়। মধ্যযুগীয় ইউরোপে সামন্ততান্ত্রিক সরকারের উত্থান, উনবিংশ শতাব্দীতে উদারনৈতিক গণতন্ত্রের বিকাশ এবং বিংশ শতাব্দীতে সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারার প্রচার ও প্রসার অর্থনৈতিক ব্যবস্থারই ফলস্বরূপ । মার্কসীয় দর্শন এবং সমাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা অর্থনৈতিক আদর্শের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল । ঐতিহাসিকভাবেই রাষ্ট্রযন্ত্রের উপর অর্থনৈতিক প্রভাব সুস্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়।
আধুনিক রাষ্ট্র জনগণের সদিচ্ছা ও সহযোগিতার উপর প্রতিষ্ঠিত। জনগণের সার্বিক উন্নতি সাধনের জন্য রাষ্ট্র অর্থনৈতিক কাঠামোকে নিয়ন্ত্রিত করে । শাসকশ্রেণী শুধু প্রশাসনিক দায় দায়িত্ব পালন করে না। বরং উৎপাদন, বন্টন, ভুমিসংস্কার, ব্যাংক, বীমা, বাণিজ্যচুক্তি মূদ্রা পরিকল্পনা ইত্যাদি অর্থনৈতিক কার্যাদিও সম্পাদন করে থাকে। সরকারের সফলতা ও ব্যর্থতা অর্থনৈতিক পরিকল্পনা এবং বাজেটের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। এছাড়া নির্বাচনী ফলাফলও রাজনৈতিক দলের অর্থনৈতিক কর্মসূচীর ভিত্তিতে অনেকটা নির্ধারিত হয়ে থাকে। অর্থনীতি সমাজের ভিত্তি সুদৃঢ় ও সুগঠিত করতে সহায়তা করে । এ সকল দিক বিশ্লেষণ করে আমরা বলতে পারি রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি পরস্পর নির্ভরশীল ।
Comments
Post a Comment