*
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে রাষ্ট্র। বিভিন্ন লেখক ও চিন্তাবিদ বিভিন্নভাবে রাষ্ট্রের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন । রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এরিস্টটল রাষ্ট্রের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন, “পরিপূর্ণ ও স্বনির্ভর জীবন গঠনের উদ্দেশ্যে কতিপয় পরিবার ও গ্রামের সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনই রাষ্ট্র।” প্রাচীন চিন্তাবিদদের রাষ্ট্রসংক্রান্ত আলোচনা মূলত আদর্শ ভিক্তিক ও নগর রাষ্ট্র কেন্দ্রিক। উড্রো উইলসনের মতে “কোন নির্দিষ্ট ভূ-খন্ডে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সংগঠিত জনসমষ্টিকে রাষ্ট্র বলে।” রাষ্ট্র সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করা যায় অধ্যাপক গার্নারের প্রদত্ত সংজ্ঞা থেকে। তাঁর মতে “রাষ্ট্র হলো কম বা বেশী এমন একটি জনসমাজ যারা একটি নির্দিষ্ট ভূ-খন্ডে স্থায়ীভাবে বসবাস করে, বাইরের নিয়ন্ত্রণ থেকে যুক্ত এবং যাদের একটি সুসংগঠিত সরকার আছে যার প্রতি অধিকাংশ অধিবাসীই সাধারণত আনুগত্য পোষণ করে।” রাষ্ট্র বিজ্ঞানী হ্যারল্ড লাস্কি বলেন “রাষ্ট্র একটি ভৌগোলিক সমাজ যা শাসক-শাসিতের মধ্যে বিভক্ত এবং সকল সংস্থার উপর স্বীয় কর্তৃত্ব দাবি করে।” বন্টুসলির মতে কোন নির্দিষ্ট ভূ-খন্ডে রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত জনসমাজই রাষ্ট্র।
সম্প্রতি মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আলমন্ড ও কোলম্যান তাঁদের 'Politics of Developing Areas' গ্রন্থে 'রাষ্ট্র' শব্দটির পরিবর্তে 'রাজনৈতিক ব্যবস্থা' কথাটি ব্যবহার করেছেন। তাদের মতে রাজনৈতিক ব্যবস্থা হলো সমাজের বৈধ শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বা পরিবর্তন আনয়নকারী ব্যবস্থা। (The political system is the legitimate order maintaining or transforming system in the society).
উপরোক্ত সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করে আমরা বলতে পারি রাষ্ট্র হল এমন একটি রাজনৈতিক সংগঠন যার নির্দিষ্ট ভূ-খন্ড, সংগঠিত সরকার, জনসমষ্টি এবং সার্বভৌম ক্ষমতা রয়েছে।
Comments
Post a Comment