Skip to main content

সেমিকন্ডাক্টর ও ইলেকট্রনিক্স - অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

*

পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্র
১০ম অধ্যায় - সেমিকন্ডাক্টর ও ইলেকট্রনিক্স
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১) একটি ট্রানজিস্টরের বেস-ইমিটার বায়াসিং কি রকম হওয়া উচিত? ব্যাখা কর।
উ: একটি ট্রানজিস্টরের বেস ইমিটার বায়াসিং সম্মুখী হওয়া উচিত। অর্থাৎ ট্রানজিস্টরটি যদি p n-p হয় তবে তার ১ম p প্রান্ত ব্যাটারীর ধনাত্মক প্রান্ত এবং n ব্যাটারীর ঋণাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত করে বর্তনী সংযােগ দেওয়া উচিত। অপরদিকে ট্রানজিস্টরটি n-p-n হলে এর ১ম n প্রান্ত ব্যাটারির ঋণাত্মক প্রান্ত এবং p প্রান্ত ব্যাটারীর ধনাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত করে বর্তনী সংযােগ দেওয়া উচিত।

২) N-type অর্ধপরিবাহী ঋণাত্মক চার্জে চার্জিত কি-না? ব্যাখ্যা কর।
উ: আমরা জানি, n টাইপ অর্ধ পরিবাহীতে অতিরিক্ত কিছু ইলেকট্রন থাকে। কিন্তু এই অতিরিক্ত ইলেকট্রন সরবরাহ করে দাতা পরমাণু। এই ইলেকট্রনগুলাে মুক্তভাবে চলাচল করতে পারলেও দাতা পরমাণু ইলেকট্রন দান করে ধনাত্মকভাবে আহিত থাকে। ফলে n টাইপ অর্ধপরিবাহীটি প্রকৃতপক্ষে তড়িৎ নিরপেক্ষ থাকে। n-type অর্ধপরিবাহীতে আধান ইলেকট্রন হলেও এটি ঋণাত্মক চার্জে চার্জিত নয়।

৩) ট্রানজিস্টরের ইমিটার ও বেস সমপরিমাণ ডােপায়িত থাকে না কেন?
উ: একটি ট্রানজিস্টরের তিনটি অংশের মধ্যে মাঝের অংশটিকে বলা হয় ভূমি বা বেস। ট্রানজিস্টরের এ বেস অংশটি খুব পাতলা রাখা হয় অর্থাৎ পুরুত্ব খুব কম রাখা হয় এবং খুবই সামান্য পরিমাণে অপদ্রব্য মিশ্রণ করা হয়, যাতে ইমিটার বা নিঃসারক থেকে বাহক আধান প্রবাহের সময় কম দূরত্ব অতিক্রম করতে হয় এবং বিপরীত আধানের সঙ্গে মিলিত হয়ে নিরপেক্ষ না হয়। এ কারণেই ট্রানজিস্টরের ইমিটার ও বেস সমপরিমাণে ডােপায়িত থাকে না।

৪) Reverse Bias-এ বিভব প্রাচীরের উচ্চতা বৃদ্ধি পায়-ব্যাখ্যা কর।
উ: বিমুখী ঝোঁকে কোষের ধনাত্মক প্রান্ত n-টাইপ এবং ঋণাত্মক প্রান্ত p-টাইপ বস্তুর সাথে সংযুক্ত থাকে। এক্ষেত্রে n-টাইপ বস্তুর মুক্ত ইলেকট্রন ধনাত্মক প্রান্তের আকর্ষণের ফলে। n-টাইপ বস্তুতেই থেকে যায় এবং জাংশন পার হয়ে কিছুতেই p-টাইপ বস্তুতে যেতে পারে না। একই কারণে p-টাইপ বস্তুর হােলও p-টাইপ বস্তু অংশেই থেকে যায়। ফলে ডিপ্লেশন লেয়ারের প্রশস্ততা বৃদ্ধি পায়।

৫) p-টাইপ অর্ধপরিবাহীর আধান বাহক হােল-ব্যাখা কর।
উ: p-টাইপ অর্ধপরিবাহীতে বিভব প্রয়ােগ করা হলে তােল তার পার্শ্ববর্তী পরমাণু থেকে একটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে ফলে পার্শ্ববর্তী পরমাণুতে হােল সৃষ্টি হয়। এভাবে হােল পরমাণু থেকে পরমাণুতে সঞ্চালিত হয়ে তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি করে অর্থাৎ হােল তড়িৎ প্রবাহে আধান বাহকের কাজ করে। এজন্য p-টাইপ অর্ধপরিবাহীর আধান বাহক হােল।

৬) NAND কে সার্বজনীন গেইট বলা হয় কেন?
উ: NOT গেইট এবং AND গেইটদ্বয়ের সমন্বয়ে NAND গেইট এর উৎপত্তি। NAND গেইটকে সার্বজনীন গেইট বলা হয়, কারণ শুধু NAND গেইট ব্যবহার করে দুই বা ততােধিক। ইনপুট এর AND, OR, NOT মৌলিক অপারেশনগুলাে করা সম্ভব।

৭) হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ চার বিট কেন দরকার হয়?
উ: হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতির বেস 16। হেক্সাডেসিমেল পদ্ধতির সর্বোচ্চ ডিজিট F, যার মান দশমিকে 15 এবং বাইনারিতে 1111। অর্থাৎ সর্বোচ্চ 4টি বিটের প্রয়ােজন।

৮) তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে অর্ধপরিবাহীর রােধ হ্রাস পায় কেন ব্যাখ্যা কর।
উ: নিম্ন তাপমাত্রায় অর্ধপরিবাহীতে ইলেকট্রনগুলাে পরমাণুতে দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ থাকে। এ তাপমাত্রায় সমযােজী অণুবন্ধনগুলাে খুবই সব হয় এবং সবগুলাে যােজন ইলেকট্রনই সমযােজী অণুবন্ধন তৈরিতে ব্যস্ত থাকে। ফলে কোনাে মুক্ত ইলেকট্রন থাকে না এবং অর্ধ পরিবাহী কেলাস এ অবস্থায় যােজন ব্যান্ড পূর্ণ থাকে এবং যােজন ব্যান্ড ও পরিবহন ব্যান্ডের মাঝে শক্তির ব্যবধান বিরাট হয়। ফলে কোনাে যােজন ইলেকট্রন পরিবহন ব্যান্ডে এসে মুক্ত ইলেকট্রনে পরিণত হতে পারে না। ফলে মুক্ত ইলেকট্রন না থাকার কারণে নিম্ন তাপমাত্রায় অর্ধপরিবাহী পদার্থ অন্তরকের ন্যায় আচরণ করে। তবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করা হলে অর্ধপরিবাহীর অনুবন্ধন ভাঙতে থাকে এবং অণুগুলাে ধীরে ধীরে মুক্ত হয়ে চলাচলে সক্ষম হয়। এর ফলে এরা তড়িৎ পরিবহনেও সক্ষম হয়। এজন্যই তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে অর্ধপরিবাহীর পরিবাহকত্ব বৃদ্ধি পায় তথা রােধ হ্রাস পায়।

৯) বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীতে তাপদ্রব্য মিশ্রিত বা ডােপায়ন করা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উ: বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীর সাথে যথােপযুক্ত কোনাে অপদ্রব্য খুব সামান্য পরিমাণ (প্রায় দশ কোটি ভাগের এক ভাগ) সুনিয়ন্ত্রিত উপায়ে মেশানাে হলে অর্ধপরিবাহীর রােধ অনেকগুণ কমে যায়। এ ধরনের মিশ্রণ প্রক্রিয়ায় বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীকে দুষিত অর্ধপরিবাহীতে পরিণত করাকে ডােপিং বলে। ডােপিং মৌলের প্রকৃতি থেকে নির্ধারিত হয় অর্ধপরিবাহীটি p টাইপ না n টাইপ হবে। ডােপায়নের জন্য ত্রিযােজী মৌল হিসেবে পর্যায় সারণির তৃতীয় সারির মৌল বােরন, অ্যালুমিনিয়াম, গ্যালিয়াম ইত্যাদি এবং পঞ্জযােজী মৌল হিসেবে পর্যায় সারণির পঞ্চম সারির মৌল ফসফরাস, আর্সেনিক, এন্টিমনি, বিসমাথ ইত্যাদি অপদ্রব্য ব্যবহৃত হয়।

১০) ডােপিং করলে অর্ধ পরিবাহীর পরিবাহিতা বৃদ্ধি পায় কেন?
উ: সাধারণ তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীতে আধান বাহকের সংখ্যা খুবই কম থাকে বলে এর তড়িৎ পরিবাহীতা কম থাকে। ডােপিং করলে অর্ধপরিবাহীতে হােলের সংখ্যা বা মুক্ত ইলেকট্রনের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এজন্য ডােপিং করলে অর্ধপরিবাহীর পরিবাহীতা বৃদ্ধি পায়।

১১) এনালগ পদ্ধতি এবং ডিজিটাল পদ্ধতি এক না ভিন্ন? ব্যাখ্যা কর।
উ: এনালগ ও ডিজিটাল পদ্ধতি ভিন্ন।
এনালগ পদ্ধতি : যে বর্তনী বা সিস্টেমের মান সময়ের সাথে নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিবর্তন হয় তাকে। এনালগ পদ্ধতি বলে।
ডিজিটাল পদ্ধতি : যে বর্তনী বা সিস্টেমের মান নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিবর্তিত না হয়ে দুটি নির্দিষ্ট মান গ্রহণ করে চলে তাকে ডিজিটাল পদ্ধতি বলে।

১২) ডােপায়ন তড়িৎ প্রবাহে কী ভূমিকা রাখে বা তড়িৎ পরিবাহীতাকে প্রভাবিত করে- ব্যাখ্যা কর।
উ: আমরা জানি, সাধারণ তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীতে আধান বাহকের সংখ্যা খুবই কম থাকে অর্থাৎ এর তড়িৎ পরিবাহিতা কম থাকে। ডােপিং এর মাধ্যমে বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীর পরিবাহিতা বৃদ্ধি করা যায়। অন্যভাবে বলা যায় বিশুদ্ধ অর্ধ পরিবাহিতা খুব সামান্য পরিমাণ বিশেষ ধরনের অপদ্রব্য মিশ্রিত করলে হােলের সংখ্যা বা মুক্ত ইলেকট্রনের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ফলে অর্ধপরিবাহীর পরিবাহিতা বৃদ্ধি পায়। অতএব, আমরা বলতে পারি ডােপায়ন বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীর পরিবাহিতা বৃদ্ধি করে।

১৩) n-p-n ট্রানজিস্টর p-n-p ট্রানজিস্টরের চেয়ে বেশি কার্যকর-ব্যাখ্যা কর।
উ: n-p-n ট্রানজিস্টর ও p-n-p ট্রানজিস্টরের কার্যনীতি একই রকম হলেও এদের পার্থক্য হলাে আধান বাহকে। n-p-n ট্রানজিস্টরের আধান বাহক ইলেকট্রন অন্যদিকে p-n-p ট্রানজিস্টরের আধান বাহক হােল। ইলেকট্রন, হােল অপেক্ষা অধিক দ্রুত পরিবাহক। ফলে উচ্চ ফ্রিকুয়েন্সি বা কম্পিউটার বর্তনীতে n-p-n ট্রানজিস্টর ব্যবহার করা হয়। এজন্য n-p-n ট্রানজিস্টর p-n-p ট্রানজিস্টরের চেয়ে বেশি কার্যকর। 

১৪) অর্ধ-পরিবাহীকে তাপ দিলে পরিবাহীর ন্যায় আচরণ করে ব্যাখ্যা কর।
উ: অর্ধ-পরিবাহীকে তাপ দিলে পরিবাহীর ন্যায় আচরণ করে। কারণ আমরা জানি, পরিবাহিতা রােধের ব্যস্তানুপাতিক। কাজেই তাপমাত্রা বাড়লে অর্ধপরিবাহীর রােধ হ্রাস পাবে। এর কারণ হলাে তাপমাত্রা বাড়ালে অতিরিক্ত শক্তি পাওয়ায় অণু পরমাণুগুলাের কম্পন বেড়ে যায় ফলে এরা বন্ধন ভেঙ্গে অনেকটা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারে যা পরিবাহিতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

১৫) তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে অর্ধপরিবাহীর পরিবাহিতা বৃদ্ধি পায় কেন?
উ: আমরা জানি, পরম শূন্য তাপমাত্রায় অর্ধ পরিবাহীর ইলেকট্রনগুলাে পরমাণুতে দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ থাকে। এই তাপমাত্রায় সহযােজী অণুবন্ধনগুলাে খুবই সবল হয় এবং সবগুলাে যােজন ইলেকট্রনই সহযােগী অণুবন্ধন তৈরিতে ব্যস্ত থাকে। ফলে কোনাে মুক্ত ইলেকট্রন থাকে না। তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে কিছু সংখ্যক সহযােজী অণুবন্ধন ভেঙে যায় এবং কিছু ইলেকট্রন পরিবহন ব্যান্ডে প্রবেশ করার মতাে যথেষ্ট শক্তি অর্জন করে এবং মুক্ত ইলেকট্রনে পরিণত হয়। এসময় সামান্য বিভব পার্থক্য প্রয়ােগে মুক্ত ইলেকট্রনগুলাে তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টি করে অর্থাৎ এর পরিবাহকত্ব বৃদ্ধি পায়।

১৬) বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীতে অপদ্রব্য মিশ্রিত করা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উ: যখন অন্য কোনাে পদার্থের উপস্থিতিতে অর্ধপরিবাহীর আচরণ প্রভাবিত হয় না তখন তাকে বিশুদ্ধ অর্ধ-পরিবাহী বলে। অর্ধ-পরিবাহীর পরিবাহিতা সুপরিবাহী পদার্থ ও উত্তম অন্তরকের মাঝামাঝি। সাধারণত বিশুদ্ধ অর্ধ-পরিবাহী পদার্থ অপরিবাহী হিসেবে কাজ করে। অর্ধপরিবাহীতে যদি কোনাে নির্দিষ্ট অপদ্রব্য খুব সামান্য অংশে (দশ লক্ষ ভাগের এক ভাগ) মেশানাে হয় তাহলে অর্ধ-পরিবাহীর রােধ অনেক কমে যায় এবং অর্ধ-পরিবাহীটি পরিবাহী হিসেবে কাজ করে। তাই বিশুদ্ধ অর্ধ-পরিবাহীতে অপদ্রব্য মেশাতে হয়।

১৭) বিমুখী ঝোঁকে ডায়ােডের ডিপ্লেশন লেয়ার বৃদ্ধি পায় কেন?
উ: বিমুখী ঝোঁকে কোষের ধনাত্মক প্রান্ত n-টাইপ এবং ঋণাত্মক প্রান্ত p-টাইপ বস্তুর সাথে সংযুক্ত থাকে। এক্ষেত্রে n-টাইপ বস্তুর মুক্ত ইলেকট্রন ধনাত্মক প্রান্তের আকর্ষণের ফলে n -টাইপ বস্তুতেই থেকে যায় এবং জাংশন পার হয়ে কিছুতেই p-টাইপ বস্তুতে যেতে পারে না। একই কারণে p-টাইপ বস্তুর হােলও p-টাইপ অংশেই থেকে যায়। ফলে ডিপ্লেশন লেয়ারের প্রশস্ততা বৃদ্ধি পায়।

১৮) p-n জাংশন ডায়ােডের ডিপ্লেশন লেয়ার চার্জ নিরপেক্ষ কেন?
উ: একটি p টাইপ ও একটি n টাইপ অর্ধপরিবাহীকে বিশেষ ব্যবস্থাধীনে সংযুক্ত করলে সংযােগ পৃষ্ঠকে p-n জাংশন বলে। p-n জংশনের যে পাশের p টাইপ অঞ্চল সেখানে সংখ্যা গুরু বাহক হােল এবং যে পাশে n টাইপ অঞ্চল সেখানে ইলেকট্রনের আধিক্য অনেক বেশি থাকে। যখন n টাইপ অঞ্চল এবং p টাইপ অঞ্চল যুক্ত হয় তখন n এর ইলেকট্রনগুলাে p এর হােল দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে ব্যাপন ক্রিয়ার মাধ্যমে জাংশনের দিকে ছুটে যায় একইভাবে p অঞ্চলের হােলগুলাে n এর ইলেকট্রন দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে ব্যাপনের মাধ্যমে সংযােগস্থলের দিকে ছুটে যায়। এভাবে p-n জংশন স্থলে ইলেকট্রন ও হােল পরমাণু মিলিত হয়ে নিরপেক্ষ হয়ে যায়।

১৯) তাপমাত্রার পরিবর্তন সাপেক্ষে অর্ধপরিবাহী ও পরিবাহীর রােধের মধ্যে ভিন্নতা কিরূপ দেখা যায়?
উ: তাপমাত্রা পরিবর্তনের সাথে সাথে অর্ধপরিবাহী ও পরিবাহীর রােধের পরিবর্তন ঘটে। তাপমাত্রা বাড়লে অর্ধপরিবাহীর পরিবাহিতা বৃদ্ধি পায়। আমরা জানি, পরিবাহিতা রােধের ব্যস্তানুপাতিক। কাজেই, তাপমাত্রা বাড়লে অর্ধপরিবাহীর রােধ হ্রাস পাবে এবং তাপমাত্রা কমলে অর্ধপরিবাহীর রােধ বৃদ্ধি পাবে। আবার, তাপমাত্রা বাড়লে অতিরিক্ত শক্তি পাওয়ায় অণু পরমাণুগুলাের কম্পন বেড়ে যায়, ফলে মুক্ত ইলেকট্রনগুলাের সাথে এদের সংঘর্ষ বৃদ্ধি পায় এবং প্রবাহ চলার পথে বেশি বাধার সৃষ্টি হয়। এতে করে পরিবাহীর রােধ বৃদ্ধি পায়। কাজেই, তাপমাত্রা বাড়লে পরিবাহীর রােধ বৃদ্ধি পাবে এবং তাপমাত্রা কমলে পরিবাহীর রােধ হ্রাস পাবে।

২১) ট্রানজিস্টরে ডিসি বায়াসিং অবস্থায় বেস কারেন্ট খুব কম হয় কেন?
উ: ডিসি বায়াসিং এর ক্ষেত্রে p অঞ্চল n অঞ্চলের তুলনায় বেশি ধনাত্মক হয়। এর ফলে n অঞ্চলের ইলেকট্রনগুলাে সহজেই p অঞ্চলে চলে আসতে পারে। অর্থাৎ এমিটার থেকে ইলেকট্রনগুলাে বেসে চলে আসে। ফলে অ্যামিটার নিঃসারক প্রবাহ IE সৃষ্টি হয়। ইলেকট্রনগুলাে p টাইপ বেসে প্রবেশ করার ফলে সেখানকার হােল এর সাথে মিলতে চায়, কিন্তু বেস খুব পাতলা হওয়ার কারণে সামান্য কিছু ইলেকট্রন হােল-এর সাথে মিলিত হয়ে ক্ষুদ্র বেস প্রবাহ সৃষ্টি করে।

২২) n-টাইপ অর্ধপরিবাহী তড়িৎ নিরপেক্ষ কি-না- ব্যাখ্যা কর।
উ: আমরা জানি, n টাইপ অর্ধ পরিবাহীতে অতিরিক্ত কিছু ইলেকট্রন থাকে। কিন্তু এই অতিরিক্ত ইলেকট্রন সরবরাহ করে দাতা পরমাণু। এই ইলেকট্রনগুলাে মুক্তভাবে চলাচল করতে পারলেও দাতা পরমাণু ইলেকট্রন দান করে ধনাত্মকভাবে আহিত থাকে। ফলে n টাইপ অর্ধপরিবাহীটি প্রকৃতপক্ষে তড়িৎ নিরপেক্ষ থাকে। 

২৩) ট্রানজিস্টর কি ডায়ােড? ব্যাখ্যা কর।
উ: একটি p টাইপ ও একটি n টাইপ অর্ধপরিবাহীকে বিশেষ ব্যবস্থায় সংযুক্ত করলে সংযােগ পৃষ্ঠকে p-n জাংশন ডায়ােড বলে। যা রেকটিফায়ার ও সুইচ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অপরপক্ষে ট্রানজিস্টর হচ্ছে তিন প্রান্ত বিশিষ্ট একটি অর্ধপরিবাহী ডিভাইস যার অন্তর্মুখী প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করে বহির্মুখী প্রবাহবিভব পার্থক্য ও ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। দুটি অর্ধপরিবাহী ডায়ােডকে পাশাপাশি যুক্ত করে একটি অর্ধপরিবাহী ট্রায়ােড বা ট্রানজিস্টর তৈরি করা হয়। তাই ট্রানজিস্টরকে দুটি ডায়ােডের সমন্বয় বলা যায়। 
২৪) p-টাইপ অর্ধ-পরিবাহী তড়িৎ নিরপেক্ষ কি-না- ব্যাখ্যা কর।
উ: সাধারণভাবে আমরা জানি, p টাইপ বস্তুতে অতিরিক্ত কিছু হােল আছে। কিন্তু এই অতিরিক্ত ইলেকট্রন সরবরাহ করে দাতা অপদ্রব্য। এই দাতা অপদ্রব্য নিজে তড়িৎ নিরপেক্ষ। যখন অপদ্রব্য মেশানাে হয় তখন যাকে ‘অতিরিক্ত ইলেকট্রন' বলা হয় প্রকৃতপক্ষে তা অর্ধপরিবাহী কেলাসে সমযােজী বন্ধন গঠনের জন্য প্রয়ােজনীয় সংখ্যক হােলের অতিরিক্ত। এই অতিরিক্ত হােল মুক্ত হােল এবং এরা অর্ধপরিবাহীর পরিবাহিতা বৃদ্ধি করে। তাই বলা যায়, p টাইপ সেমিকন্ডাক্টর প্রকৃতপক্ষে তড়িৎ নিরপেক্ষ।

২৫) ট্রানজিস্টরের বেস অংশ পাতলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উ: একটি ট্রানজিস্টরের তিনটি অংশের মধ্যে মাঝের অংশটিকে বলা হয় ভূমি বা বেস। ট্রানজিস্টরের এ বেস অংশটি খুব পাতলা রাখা হয় অর্থাৎ পুরুত্ব খুব কম রাখা হয় এবং খুবই সামান্য পরিমাণে অপদ্রব্য মিশ্রণ করা হয়, যাতে এমিটার বা নিঃসারক থেকে বাহক আধান প্রবাহের সময় কম দূরত্ব অতিক্রম করতে হয় এবং বিপরীত আধানের সঙ্গে মিলিত হয়ে নিরপেক্ষ না হয়।

২৬) ট্রানজিস্টরকে অ্যামপ্লিফায়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় কেন?
উ: আমরা জানি, ট্রানজিস্টর পীঠ প্রবাহের সামান্য পরিবর্তন সংগ্রাহক প্রবাহের বিরাট পরিবর্তন ঘটায়। ট্রানজিস্টর পীঠ প্রবাহকে 50 থেকে 100 গুণ বাড়িয়ে দিয়ে সংগ্রাহক প্রবাহ হিসেবে প্রদান করতে পারে। তাই বিভিন্ন ইলেকট্রনিক বর্তনীতে সংকেতকে বিবর্ধিত করার জন্য ট্রানজিস্টরকে অ্যামপ্লিফায়ার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

২৭) অবিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীর প্রয়ােজনীয়তা কী?
উ: তাপের প্রভাবে বিশুদ্ধ অর্ধ-পরিবাহীতে তড়িত্বহক হােল বা মুক্ত ইলেকট্রন সৃষ্টি হয়। কিন্তু সাধারণ তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীতে এ আধান বাহকের সংখ্যা খুবই কম, অর্থাৎ এর তড়িৎ পরিবাহিতা খুব কম। ডােপিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীর পরিবাহিতা লক্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি করা যায়। অন্যভাবে বলা যায়, বিশুদ্ধ অর্ধ-পরিবাহীতে খুব সামান্য পরিমাণ বিশেষ ধরনের অপদ্রব্য মিশ্রিত করলে হেলের সংখ্যা বা মুক্ত ইলেকট্রনের সংখ্যা অনেক বাড়ানাে যায়, ফলে তড়িৎপরিবাহিতাও বৃদ্ধি পায়। এভাবে অপদ্রব্য মিশ্রিত অর্ধ-পরিবাহীকে অবিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহী বলে। অতএব বলা যায়, বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীর পরিবাহিতা কম বলে অবিশুদ্ধ অর্ধ পরিবাহী প্রয়ােজন।

২৮) N-শ্রেণির অর্ধপরিবাহীতে সংখ্যাগরিষ্ঠ বাহক ইলেকট্রন কেন থাকে?
উ: জার্মেনিয়াম বা সিলিকন অর্ধপরিবাহীর সাথে পঞ্চযােজী মৌল মিশিয়ে n-টাইপ অর্ধপরিবাহী তৈরি হয়। যেমন, এন্টিমনি, আর্সেনিক ইত্যাদি। এন্টিমনি বা জার্মেনিয়ামের 5 টি যােজন ইলেকট্রনের 4টি জার্মেনিয়াম বা সিলিকনের 4টি যােজন ইলেকট্রনের অংশীদার হয়ে বা পাশাপাশি অবস্থানের মাধ্যমে সমযােজী বন্ধন গঠন করে। প্রতিটি আর্সেনিক বা এন্টিমনি পরমাণুর একটি ইলেকট্রন উদ্বৃত্ত থাকে এবং ঐ ইলেকট্রনের কেলাসের মধ্যে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে পারে। সুতরাং n-টাইপ অর্ধ পরিবাহীতে ইলেকট্রন ও হােল উভয়ের উপস্থিতি থাকলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ বাহক হিসেবে থাকে ইলেকট্রন।

২৯) আদর্শ ডায়ােডের বৈশিষ্ট্য-ব্যাখ্যা কর। নিটর ডেম কলেজ, ঢাকা] 
উ: আদর্শ ডায়াড়ের বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ – 
(ক) সম্মুখী বায়াসে এটি পরিবাহকের মত কাজ করে।
(খ) বিমুখী বায়াসে অন্তরকের মত কাজ করে।
(গ) এতে থ্রেসহােল্ড বা নী ভােল্টেজের ব্যাপার নেই।
(ঘ) এতে সম্মুখী বিভব পতন শূন্য।

নিজে কর
১) শক্তি ব্যান্ড কীভাবে সৃষ্টি হয়?
২) জেনার ভােল্টজকে কেন বিনাশী ভােল্টেজ বলা হয়? ব্যাখ্যা কর।
৩) p-n জাংশনে ডিপ্লেশন স্তর তৈরি হয় কীভাবে? ব্যাখ্যা কর।
৪) p-n জাংশনে সম্মুখী ঝোঁক ব্যাখ্যা কর।
৫) ঝোঁক ব্যতীত p-n জাংশনে দুই প্রান্তের বিভব মাপা সম্ভব কি? ব্যাখ্যা কর।
৬) ট্রানজিস্টরকে অ্যাপ্লিফায়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় কেন?
৭) ডায়ােড কেন একমুখীকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়- ব্যাখ্যা কর। 


Comments