*
পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্র
১০ম অধ্যায় - সেমিকন্ডাক্টর ও ইলেকট্রনিক্স
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১) সম্মুখী ঝোঁক কাকে বলে?
উ: p-n জংশনে যদি বহিঃস্থ ভােল্টেজ বা বিভব পার্থক্য প্রয়ােগ করা হয় তাহলে তড়িৎ প্রবাহ ঘটে। ভােল্টেজ যদি কোষের ধনাত্মক প্রান্ত p-টাইপ বস্তুর সাথে এবং ঋণাত্মক প্রান্ত n-টাইপ বস্তুর সাথে সংযুক্ত হয় তবে তাকে সম্মুখী ঝোঁক বলে।
২) Break down voltage কাকে বলে ?
উ: বিমুখী ঝোঁকের ক্ষেত্রে যে ভােল্টেজ প্রয়ােগ করলে ডায়ােডের বিপরীত তড়িৎ প্রবাহ হঠাৎ বিপুল পরিমাণ বৃদ্ধি পায় সে ভােল্টেজকে জেনার ভােল্টেজ বা ব্রেক ডাউন ভােল্টেজ বলে।
৩) p-টাইপ অর্ধপরিবাহী কাকে বলে?
উ: কোনাে বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহকে সামান্য পরিমাণ ত্রিযােজী অর্থাৎ পর্যায় সারণির তৃতীয় সারির মৌল (যেমন, অ্যালুমিনিয়াম) অপদ্রব্য হিসেবে মেশানাে হলে, তাকে p-টাইপ অর্ধপরিবাহী বলে।
৪) ডােপিং বলতে কী বুঝ?
উ: বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীর সাথে খুব সামান্য পরিমাণে ত্রি বা পঞযােজী মৌলের মিশ্রণের কৌশলকে ডােপিং বলে।
৫) রেকটিফায়ার কাকে বলে?
উ: যে যন্ত্রের সাহায্যে এসি তড়িৎ প্রবাহকে ডিসি তড়িৎ প্রবাহে পরিণত করা যায় অর্থাৎ তড়িৎ প্রবাহকে একমুখী করা যায় তাকে রেকটিফায়ার বা একমুখীকারক বলে।
৬) লিকেজ প্রবাহ কাকে বলে?
উ: ডায়ােডের বিপরীত ঝোঁকের ক্ষেত্রে ভােল্টেজের মান বৃদ্ধির সাথে সাথে কারেন্টের মান বেড়ে যে নির্দিষ্ট মানে পৌছে স্থির হয়ে যায় তাকে লিকেজ প্রবাহ বলে।
৭) শক্তি ব্যান্ড কাকে বলে?
উ: কোনাে পদার্থের বিভিন্ন পরমাণুতে একই কক্ষপথে আবর্তনরত ইলেকট্রনগুলাের শক্তির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মানের মধ্যবর্তী পাল্লাকে শক্তি ব্যান্ড বলে।
৮) হেক্সাডেসিমেল নম্বর পদ্ধতি কাকে বলে?
উ: যে সংখ্যা পদ্ধতির ডিজিটগুলাে 0,1,2,3,4,5,6,7,8,9, A, B, C, D, E ও F এবং বেজ 16 তাকে হেক্সাডেসিমেল নম্বর পদ্ধতি বলে।
৯) কোয়ার্ক কী?
উ: কোয়ার্ক হলাে অতি পারমাণবিক কণা যা দ্বারা প্রােটন ও নিউট্রনসমূহ গঠিত।
১০) অর্ধপরিবাহী কাকে বলে?
উ: যে সমস্ত পদার্থের তড়িৎ পরিবাহিতা পরিবাহী ও অন্তরকের মাঝামাঝি, সেগুলােকে অর্ধপরিবাহী পদার্থ বলে। তাপমাত্রা বাড়ালে এদের তড়িৎ পরিবাহিতা বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।
১১) বহির্জাত অর্ধপরিবাহী কাকে বলে?
উ: যেসব অর্ধ পরিবাহীতে অপদ্রব্য মিশ্রিত থাকে তাদেরকে বহির্জাত অর্ধপরিবাহী বলে।
১২) জেনার ভােল্টেজ কাকে বলে?
উ: একটি p-n জাংশন ডায়ােডকে বিমুখী ঝোঁকপ্রাপ্ত অবস্থায় পশ্চাৎমুখী বায়াস বাড়াতে থাকলে যে বিশেষ ভােল্টেজে প্রবাহমাত্রা হঠাৎ খুব বেশি বেড়ে যায়, সেই ভােল্টেজকে জেনার ভােল্টেজ
বলে।
১৩) প্রবাহ বিবর্ধক গুণক কাকে বলে?
উ: সংগ্রাহক পীঠ ভােল্টেজ VCB ধ্রুব থাকলে সংগ্রাহক প্রবাহ IC ও নিঃসারক প্রবাহ IE এর অনুপাতকে প্রবাহ বিবর্ধন গুণক (α) বলে।
১৪) জেনার ডায়ােড কী?
উ: এটি জেনার ভােল্টেজে ক্রিয়াশীল বিশেষ ধরনের ডায়ােড, স্থির মানের ডি. সি. ভােল্টেজ পাওয়ার জন্য পাওয়ার সাপ্লাইতে ব্যবহার করা হয়। জেনার ডায়ােড বিপরীত ঝোঁকে ক্রিয়াশীল।
১৫) পরিবাহী কাকে বলে?
উ: যে সমস্ত পদার্থের ভেতর দিয়ে তড়িৎ সহজে চলাচল করতে পারে সেগুলােকে পরিবাহী বলে।
১৬) অন্তরক বা অপরিবাহী কাকে বলে?
উ: যে সমস্ত পদার্থের ভেতর দিয়ে তড়িৎ সহজে চলাচল করে না, সেগুলােকে অন্তরক বা অপরিবাহী বলে।
১৭) আই. সি. (IC) কী?
উ: এটি একটি সিলিকনের তৈরি সলিড স্টেট (Solid state) অর্ধপরিবাহী ডিভাইস যাকে চিপ বলে। একটি চিপের মধ্যে বহু সংখ্যক ডায়ােড, ট্রানজিস্টর, রােধক, ধারক ইত্যাদি অভ্যন্তরীণভাবে সংযুক্ত থাকে।
১৮) পরিবহন ব্যান্ড কাকে বলে?
উ: পরমাণুর মুক্ত ইলেকট্রনগুলাের জন্য যে ব্যান্ড বা পাল্লা তৈরি হয় তাকে পরিবহন ব্যান্ড বলে। পরিবহন ব্যান্ডের ইলেকট্রনগুলাে বিদ্যুৎ পরিবহনে অংশগ্রহণ করে।
১৯) হােল কাকে বলে?
উ: পরমাণুর বন্ধন থেকে কোনাে ইলেকট্রন বিচ্ছিন্ন হলে ওই অবস্থানে যে শূন্যস্থানের সৃষ্টি হয়। তাকে হােল বা গর্ত বলে। এর কার্যকর আধান +e, যদিও এটি কোনাে বাস্তব কণিকা নয়।
২০) যােজন ব্যান্ড কাকে বলে?
উ: কোনাে পদার্থের মধ্যে যােজ্যতা ইলেকট্রনগুলি যে সমস্ত শক্তি স্তরে থাকে, সেই সকল শক্তি স্তর নিয়ে যে শক্তি ব্যান্ড তৈরি হয় তাকে যােজন ব্যান্ড বলে।
২১) অবিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহী কাকে বলে?
উ: বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীর সঙ্গে বিশেষ ধরনের অপদ্রব্যকে সুপরিকল্পিতভাবে মিশালে অর্ধপরিবাহীটির তড়িৎ পরিবহন ক্ষমতা বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। একেই অবিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহী বলে।
২২) ভােগ্যান্ট কাকে বলে?
উ: অর্ধপরিবাহীর সঙ্গে মিশ্রিত অপদ্রবকে ডােপ্যান্ট বলে।
২৩) নিষিদ্ধ শক্তি ব্যবধান বা ফাঁক কাকে বলে?
উ: পরিবহন ব্যান্ড ও যােজন ব্যান্ডের বা যে কোনাে দুটি ব্যান্ডের মধ্যবর্তী অঞ্চল যেখানে ইলেকট্রন থাকতে পারে না, তাকে নিষিদ্ধ শক্তি ব্যবধান বা ফাঁক বলে।
২৪) বিশুদ্ধ বা সহজাত অর্ধপরিবাহী কাকে বলে?
উ: যে সমস্ত অর্ধপরিবাহীতে ইলেকট্রন ও হােলের সংখ্যা সমান থাকে সেগুলােকে বিশুদ্ধ বা সহজাত অর্ধপরিবাহী বলে। এই সমস্ত অর্ধপরিবাহীতে কোনাে ভেজাল থাকে না।
২৫) n-টাইপ অর্ধপরিবাহী কী?
উ: বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীতে পঞ্চযােজী মৌল খুব সামান্য পরিমাণে মিশ্রিত করলে n-টাইপ অর্ধপরিবাহী হয়। এই ধরনের পদার্থে তড়িৎ পরিবহনে ইলেকট্রনই মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
২৬) জাংশন ডায়ােড কাকে বলে?
উ: একটি p-টাইপ এবং একটি n-টাইপ অর্ধপরিবাহীকে বিশেষ ব্যবস্থাধীনে সংযুক্ত করলে সংযােগ পৃষ্ঠকে p-n জাংশন বা জাংশন ডায়ােড বলে। জাংশন ডায়ােডে একমুখী তড়িৎ প্রবাহ ঘটে।
২৭) বিপরীত ঝোঁক কাকে বলে?
উ: ডায়ােডে বা জাংশনে বাহ্য ভােল্টেজ প্রয়োেগ যদি এমন হয় যে বিভব প্রাচীরের উচ্চতা বৃদ্ধি পায়, তখন একে বিপরীত ঝোঁক প্রয়ােগ বলে।
২৮) ট্রানজিস্টর কাকে বলে?
উ: দুটি p-n জাংশনকে পাশাপাশি বিশেষ কায়দায় সংযুক্ত করলে ট্রানজিস্টর হয়। দুটি P-টাইপ বা দুটি n-টাইপ অর্ধপরিবাহীর মাঝখানে অত্যন্ত পাতলা এবং খুবই হাল্কা ডােপিং সমৃদ্ধ যথাক্রমে একটি n-টাইপ বা একটি p-টাইপ অর্ধপরিবাহী সংযুক্ত করে p-n-p এবং n-p-n ট্রানজিস্টর তৈরি করা হয়।
২৯) অ্যামপ্লিফায়ার কাকে বলে?
উ: এটি এক ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস বা কৌশল যার ইনপুট বর্তনীতে দুর্বল সংকেত প্রয়ােগ করে বহিঃবর্তনী হতে বহুগুণ বিবর্ধিত সংকেত পাওয়া যায়।
৩০) ডিজিটাল পদ্ধতি কী? উ: ডিজিটাল পদ্ধতি হলাে এমন একটি প্রক্রিয়া যাতে আলাদা আলাদা একক ব্যবহৃত হয়। যেমন আঙ্গুল, হাত, ডিজিট (0,1,2, ... ... ...) ইত্যাদি। এই এককগুলি এককভাবে বা গুচ্ছাকারে ব্যবহার করে কোনাে পূর্ণসংখ্যা প্রকাশ করা যায়।
৩১) লজিক গেট কী?
উ: লজিক গেট একটি ইলেকট্রনিক্স বর্তনী যা যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এর একটি আউটপুট এবং এক বা একাধিক ইনপুট প্রান্ত থাকে। ইনপুট সিগনালের নির্দিষ্ট সমন্বয়ের জন্য আউটপুট সিগনাল আবির্ভূত হয়।
Comments
Post a Comment