*
পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্র
৮ম অধ্যায় - আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের সূচনা
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১) সূচন কম্পাঙ্ক কাকে বলে?
উ: আপতিত ফোটনের কম্পাঙ্কের যে ন্যূনতম মানের জন্য ধাতব পৃষ্ঠ হতে ইলেকট্রন নির্গত হতে পারে সেই কম্পাঙ্ককে সূচন কম্পাঙ্ক বলে।
২) আলােক তড়িৎ ক্রিয়া কাকে বলে?
উ: উচ্চ কম্পাঙ্কবিশিষ্ট আলােকরশ্মি কোনাে ধাতবপৃষ্ঠে আপতিত হলে তা থেকে ইলেকট্রন নিঃসৃত হয়, এ ঘটনাকে আলােক তড়িৎ ক্রিয়া বলে।
৩) কাল দীর্ঘায়ন কাকে বলে?
উ: কোনাে পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে গতিশীল অবস্থায় সংঘটিত দুটি ঘটনার মধ্যবর্তী কাল ব্যবধান ঐ পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে নিশ্চল অবস্থায় সংঘটিত ঐ একই ঘটনাদ্বয়ের মধ্যবর্তী কাল ব্যবধানের চেয়ে বেশি হবে, এ ঘটনাকে কাল দীর্ঘায়ন বলে।
৪) ফটোইলেকট্রন কাকে বলে?
উ: যথাযথ উচ্চ কম্পাঙ্কের আলােক রশ্মি, কোনাে ধাতব পৃষ্ঠে আপতিত হলে তা থেকে ইলেকট্রন নিঃসৃত হয়, এই ইলেকট্রনকে ফটোইলেকট্রন বলে।
৫) দৈর্ঘ্য সংকোচন কাকে বলে?
উ: কোনাে বস্তুর গতিশীল অবস্থার দৈর্ঘ্য, ওই বস্তুর স্থির অবস্থার দৈর্ঘ্যের চেয়ে ছােট হওয়াকে দৈর্ঘ্য সংকোচন বলে।
৬) ফোটন কাকে বলে?
উ: কোনাে বস্তু থেকে আলাে বা কোনাে শক্তির নিঃসরণ নিরবচ্ছিন্নভাবে হয় না। শক্তি বা বিকিরণ ছিন্নায়িত অর্থাৎ গুচ্ছ গুচ্ছ আকারে প্যাকেট বা কোয়ান্টাম হিসেবে নিঃসৃত হয়। আলাে তথা যেকোনাে বিকিরণ অসংখ্য বিকিরণ কোয়ান্টাম সমষ্টি। আলাের এই কণা বা প্যাকেট বা কোয়ান্টামকে ফোটন বলে।
৭) জড় কাঠামাে কাকে বলে?
উ: যে সব প্রসঙ্গ কাঠামােতে জড়তার সূত্র এবং নিউটনের গতির প্রথম সূত্র প্রযােজ্য হয় তাকে জড় কাঠামাে বা জড়তার কাঠামাে বলে।
৮) গ্যালিলীয় রূপান্তর কী?
উ: চিরায়ত পদার্থবিজ্ঞানের যেসব সমীকরণ পরস্পরের সাপেক্ষে ধ্রুববেগে গতিশীল দুটি প্রসঙ্গ কাঠামাের সময় ও স্থানাঙ্কের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে তাদের গ্যালিলীয় রূপান্তর বলা হয়।
৯) নিবৃত্তি বিভৰ কাকে বলে?
উ: ক্যাথােড প্লেটের সাপেক্ষে অ্যানােড প্লেটে যে ন্যূনতম ঋণ বিভব দিলে আলােক তড়িৎ প্রবাহমাত্রা সদ্য বন্ধ হয়ে যায় সেই বিভবই নিবৃত্তি বিভব।
১০) অজড় কাঠামাে কাকে বলে?
উ: যে কাঠামােতে জড়তার সূত্র এবং নিউটনের গতির প্রথম সূত্র প্রযােজ্য হয় না, তাকে অজড় কাঠামাে বলে।
১১) নিউটনীয় বা চিরায়ত বলবিদ্যার মৌলিক রাশিগুলাে কী কী?
উ: (i) দেশ বা স্থান , (ii) সময় বা কাল , (iii) ভর
১২) আপেক্ষিকতা কাকে বলে?
উ: আইনস্টাইনের মতে স্থান, কাল এবং ভর এদের কোনােটিই নিরপেক্ষ বা পরম নয়, প্রত্যেকটি অন্য কিছুর সাপেক্ষে বিবেচিত হয়। কোনাে বিষয় অন্য কোনাে কিছুর সাপেক্ষে বিবেচিত হওয়াই আপেক্ষিকতা। আইনস্টাইনের এই তত্ত্বকে আপেক্ষিক তত্ত্ব বলা হয়।
১৩) 1 আলােক বর্ষ কাকে বলে?
উ: এক বছরে আলােক রশ্মি যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে 1 আলােক বর্ষ বলে।
১৪) আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্বের মৌলিক স্বীকার্যসমূহ বিবৃতি কর।
উ: (i) সব জড় কাঠামােতে পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রসমূহ অভিন্ন থাকে।
(ii) শূন্যস্থানে সব পর্যবেক্ষকের নিকট আলাের বেগ সর্বদা সমান থাকে।
১৫) লরেঞ্জের রূপান্তর সূত্র বিবৃতি কর।
উ: যে রূপান্তর সূত্রে বিদ্যুৎ চুম্বকীয় সমীকরণ বিভিন্ন কাঠামােতে অভিন্ন থাকে, তাকে লরেঞ্জের রূপান্তর সূত্র বলে।
১৬) প্রসঙ্গ কাঠামাে কাকে বলে?
উ: বস্তুর অবস্থান বা গতি বর্ণনার জন্য যে প্রসঙ্গ স্থানাঙ্ক নির্দেশ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তাকে প্রসঙ্গ কাঠামাে বলে।
১৭) ভরের আপেক্ষিকতা কী?
উ: দৈর্ঘ্য ও সময়ের মত বস্তুর ভর ও গতিশীলতার উপর নির্ভরশীল; তত্ত্বানুসারে বস্তুর ভর বেগের সাথে বৃদ্ধি পায়।
১৮) ভর-শক্তির সম্পর্ক কী?
উ: আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্বের সাহায্যে আইনস্টাইন বস্তুর ভর ও শক্তির মধ্যে নিম্নরূপ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেন : E = mc2 , এখানে E = শক্তি , m = বস্তুর ভর এবং c = আলাের বেগ।
১৯) প্ল্যাঙ্ক-এর কোয়ান্টাম তত্ত্ব বিবৃতি কর।
উ: কোনাে বস্তু হতে শক্তির বিকিরণ বা বিভিন্ন বস্তুর মধ্যে শক্তির বিনিময় নিরবচ্ছিন্নভাবে ঘটে না। তেজশক্তি বিচ্ছিন্নভাবে খণ্ড খণ্ড আকারে এক একটি প্যাকেটে নির্গত বা শােষিত হয়।
২০) লরেঞ্জ রূপান্তরের সূত্রের স্বীকার্য-১ বিবৃতি কর।
উ: পদার্থবিদ্যার সূত্রগুলাে সকল অভ্যন্তরীণ কাঠামােয় অভিন্ন থাকে; তবে কাঠামােগুলােকে পরস্পরের সাপেক্ষে সমবেগে গতিশীল থাকতে হবে।
২১) লরেঞ্জ বল কাকে বলে?
উ: কোনাে তড়িতাধান (চার্জ) একই সঙ্গে তড়িৎ ক্ষেত্র এবং চৌম্বক ক্ষেত্রের ভেতর দিয়ে গেলে মােট যে বল অনুভব করে, তাকে লরেঞ্জ বল বলে।
২২) লরেঞ্জ রূপান্তরের সূত্রের স্বীকার্য-২ বিবৃতি কর।
উ: শূন্যস্থানে আলাের বেগ সর্বদা ধ্রুব থাকে, এটি একটি অভ্যন্তরীণ কাঠামাে হতে অন্যটিতে রূপান্তরিত হলেও মান অপরিবর্তিত থাকে এবং আলাের এই বেগ c = 3 x 108 m . এ মান দর্শকের স্থিতি বা গতিশীলতার ওপর নির্ভর করে না।
২৩) আলােক তড়িৎ কাকে বলে?
উ: ধাতব পদার্থ হতে নির্গত ইলেকট্রন প্রবাহিত হওয়ার ফলে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় তাকে আলােক তড়িৎ বলা হয়।
২৪) আলােক তড়িৎ প্রবাহ কাকে বলে?
উ: নির্গত ইলেকট্রন প্রবাহের ফলে যে বিদ্যুৎ প্রবাহ উৎপন্ন হয় তাকে আলােক তড়িৎ প্রবাহ বলে।
২৫) আলােক তড়িৎ নির্গমনের ১ম সূত্র বিবৃতি কর।
উ: আলােক তড়িৎ নির্গমন একটি তাৎক্ষণিক ঘটনা।
২১) তরঙ্গ কণা দ্বৈততা কী?
উ: সকল শক্তি তরঙ্গ সদৃশ এবং কণা সদৃশ উভয় ধর্ম প্রদর্শন করে। ইহাই তরঙ্গ কণা দ্বৈততা।
৩০) কার্য অপেক্ষক কাকে বলে?
উ: কোনাে একটি ইলেকট্রনকে নিঃসারকের নিউক্লিয়াসের আকর্ষণ বন্ধন হতে মুক্ত করতে যে পরিমাণ কাজ সম্পাদন করতে হয়, তাকে আলােক তড়িৎ কার্য অপেক্ষক বলে।
৩১) ডিব্ৰগলী তরঙ্গ কাকে বলে?
উ: প্রত্যেক চলমান পদার্থ কণার সাথে একটি তরঙ্গ যুক্ত থাকে। এই তরঙ্গকে ডি ব্ৰগলী তরঙ্গ বলে।
৩২) কম্পটন ক্রিয়া বা প্রভাব কাকে বলে?
উ: একবর্ণী এক্স রশ্মির বিক্ষেপণের দরুন বিক্ষিপ্ত বিকিরণের তরঙ্গদৈর্ঘ্য তথা কম্পাঙ্কের পরিবর্তন ঘটে। এ ক্রিয়াকে কম্পটন ক্রিয়া বা প্রভাব বলে।
৩৩) কম্পটন ক্রিয়া কাকে বলে?
উ: হালকা পদার্থের ইলেকট্রন দ্বারা এক্স-রশ্মি বিক্ষিপ্ত হলে বিক্ষিপ্ত রশ্মির ভেতর আপতিত তরঙ্গদৈর্ঘ্য ছাড়াও কিছু পরিবর্তিত তরঙ্গদৈর্ঘ্যের এক্স-রশ্মি পাওয়া যায়। এই পরিবর্তিত তরঙ্গদৈর্ঘ্যগুলাে প্রাথমিক রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য অপেক্ষা দীর্ঘতর হয়। এই ঘটনাকে কম্পটন ক্রিয়া বলে।
৩৪) হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা সূত্র বিবৃতি কর।
উ: যদি কোনাে কণার কোনাে নির্দিষ্ট সময়ে অবস্থানের অনিশ্চয়তা ∆x এবং ভরবেগের অনিশ্চয়তা ∆p হয়, তবে এদের গুণফল প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবকের সমান বা বড় হবে। একেই হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা সূত্র বলে।
Comments
Post a Comment